
অনেকেই মনে করেন, ফেসবুকে নিয়মিত প্রোডাক্টের পোস্ট করলেই ব্র্যান্ড সক্রিয় থাকে এবং বিক্রি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু এটি একটি বড় ভুল ধারণা। ফেসবুকের অ্যালগরিদম বলে, যদি কোনো পোস্ট মানুষের মনকে না ছুঁয়ে যায়, তবে তা শুধু সময় নষ্টই করে না, ব্র্যান্ডের মূল্যও কমিয়ে দেয়। ফলাফল? বিক্রি বাড়ার বদলে কমে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
মানুষের মন জয় করতে চান? তাহলে কনটেন্ট তৈরি করুন এমনভাবে যেন তা সরাসরি তাদের হৃদয়ে পৌঁছায়। মানুষ যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেও, কেনাকাটার ব্যাপারে তাদের হৃদয়ই প্রধান ভূমিকা পালন করে। এই কারণে আপনার কনটেন্টে থাকতে হবে এমন কিছু, যা তাদের আবেগকে জাগায়।
একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী সূত্র আছে, যা মেনে কনটেন্ট তৈরি করলে আপনি অডিয়েন্সের মন জয় করতে পারবেন। সূত্রটি হলো: সলিউশন, ইমোশন, এবং রিক্রিয়েশন। এই তিনটি উপাদানের যেকোনো একটি বা একাধিক ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরি করুন, দেখবেন ফলাফল আশ্চর্যজনক।

১. সলিউশন: সমস্যার সমাধান দিন
আপনার প্রোডাক্টের ফিচার নিয়ে কথা বললে তা মানুষের মাথায় পৌঁছাতে পারে, কিন্তু হৃদয়ে নয়। মানুষ যখন কেনাকাটা করে, তখন তারা সমাধান খোঁজে, ফিচার নয়। তাই আপনার কনটেন্টে হাইলাইট করুন যে আপনার প্রোডাক্ট কীভাবে তাদের জীবনের একটি সমস্যা সমাধান করবে।
উদাহরণ (হোমমেইড কেক):
ধরুন, আপনি হোমমেইড কেক বিক্রি করেন। বাজারের কেকগুলো প্রায়ই ক্ষতিকর উপাদান, যেমন ডালডা দিয়ে তৈরি হয়, যা বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আপনার কেক? সেগুলো তৈরি হয় স্বাস্থ্যকর উপাদান দিয়ে, যা বাচ্চারা বেশি খেলেও নিরাপদ। এই বার্তাটি যদি আপনি আপনার কনটেন্টে তুলে ধরেন, তাহলে প্রতিটি মায়ের হৃদয়ে সেটি পৌঁছাবে। তারা ভাববে, “এই কেক আমার সন্তানের জন্য নিরাপদ।” এটি তাদের ক্রয়ের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে।
২. ইমোশন: আবেগের সাথে সংযোগ স্থাপন করুন
আবেগ মানুষের ক্রয় সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা পালন করে। বড় বড় ব্র্যান্ড এই কৌশল ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা আয় করে। আপনার কনটেন্টে আবেগের ছোঁয়া যোগ করুন, দেখবেন বিক্রি বাড়তে শুরু করবে।
উদাহরণ (হোমমেইড কেক):
একটি পোস্টে লিখুন: “আপনার সন্তানের হাসিমুখ দেখে কি আপনার মন ভরে যায়? কিন্তু জানেন কি, বাজারের কেক তাদের স্বাস্থ্য নষ্ট করতে পারে?” এরপর আপনার হোমমেইড কেকের স্বাস্থ্যকর গুণাবলী তুলে ধরুন। এমন একটি পোস্ট কোনো মা-বাবার পক্ষে উপেক্ষা করা কঠিন। কারণ এটি তাদের সন্তানের প্রতি ভালোবাসার আবেগকে স্পর্শ করে। তারা বেশি দাম দিয়েও আপনার কেক কিনতে দ্বিধা করবে না, কারণ এটি তাদের হৃদয়ে পৌঁছেছে।
৩. রিক্রিয়েশন: বিনোদনের মাধ্যমে মনোযোগ আকর্ষণ করুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমসাময়িক ঘটনা বা জনপ্রিয় বিষয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করে কনটেন্ট তৈরি করলে তা অডিয়েন্সের মনোযোগ ধরে রাখে। এই ধরনের কনটেন্ট মানুষকে বিনোদিত করে এবং ব্র্যান্ডের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ায়।
উদাহরণ (হোমমেইড কেক):
ধরুন, কোনো জনপ্রিয় নাটকের ডায়ালগ বা মিমের সাথে আপনার কনটেন্ট জুড়ে দিন। যেমন: “মায়েরা, দুটি জিনিস মনে রাখবেন:
১. বাজারের কেক কিনে সন্তানের স্বাস্থ্য নষ্ট করবেন না।
২. উৎসবের সময় আমাদের হোমমেইড কেক বেছে নিন, যা স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু!”
এই ধরনের কনটেন্ট মজার এবং সমসাময়িক হওয়ায় মানুষের মনে সহজে জায়গা করে নেয়।
উপসংহার
এই তিনটি উপাদান—সলিউশন, ইমোশন, এবং রিক্রিয়েশন—মাথায় রেখে কনটেন্ট তৈরি করুন। আপনার পোস্ট শুধু ফেসবুকে ভাইরাল হবে না, বরং আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের ভালোবাসা এবং বিক্রি দুটোই বাড়বে। এই সূত্র ভিডিও কনটেন্টের ক্ষেত্রেও সমানভাবে কার্যকর। তাই আজই শুরু করুন, মানুষের হৃদয় জয় করুন এবং আপনার ব্র্যান্ডকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান!

এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মতামত অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এছাড়াও তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করতে অথবা আপনার সমস্যার কথা জানাতে Ask করুণ টিপি সমাধান -এ। আপনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্নের উত্তর ও সমস্যার সমাধান দিতে টিপি সমাধান আছে আপনার পাশে।
বিঃদ্রঃ টেক প্রহরে প্রকাশিক সকল কনটেন্ট (যেমনঃ লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও, কোড, ফাইল ইত্যাদি) এবং যাবতীয় কার্যকলাপের সম্পূর্ণ দায়ভার শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশকারীর। আপনার যদি টেক প্রহরে প্রকাশিক কোনো কনটেন্ট এর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাহলে কনটেন্ট রিপোর্ট অথবা অপসারণের অনুরোধ করতে পারেন, আমরা আপনার অভিযোগটি খতিয়ে দেখবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.